স্বদেশ ডেস্ক
সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে সার্বিক কল্যাণ কামনা এবং পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মুসলমানরা রোববার (১০ জুলাই) সারাদেশে তাদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা উদযাপন করছে।
এদিন সকালে প্রথম ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। নামাজ আদায়ের পরেই এদিনের প্রধান অনুষঙ্গ আল্লাহর রাহে পশু কোরবানির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। তারপর জনে-জনে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি আর ঈদ-শুভেচ্ছা বিনিময় করেন সকলে। এজন্য অনেকেই বেড়াতে যাবেন আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে।
রোবার সারাদেশের মসজিদ ও ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে মুসল্লিরা বিশ্ব সম্প্রদায়ের মধ্যে শান্তি ও সম্প্রীতির প্রার্থনা করেন।
রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে একাধিক জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেন।
আল্লাহর নামে কোরবানির পশু জবাইয়ের মধ্য দিয়ে দেশব্যাপী মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
আল্লাহর প্রতি পূর্ণ ভালোবাসা প্রদর্শনের জন্য নবী ইবরাহী আ: তার প্রিয় পুত্র ইসমাইলকে কুরবানি দিতে উদ্যত হন। এতে সন্তুষ্ট হয়ে আল্লাহ ইবরাহীমকে আ: তার খলিল বা বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেন। এই ঘটনাকে স্মরণ করে সারাবিশ্বের মুসলিমরা আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য প্রতি বছর ঈদুল আযহার এই দিনটি উদ্যাপন করেন।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের পৃথক ঈদ বাণীতে দেশবাসীকে আত্মত্যাগের চেতনায় একাত্ম হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, গতবারের মতো এবারও করোনার বিস্তার রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ উদযাপন করবেন মুসলমানরা। বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস রোধে ধর্ম মন্ত্রণালয় ৮ দফা নির্দেশনা জারি করেছে।
নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে খতিব, ইমাম এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয় প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
করোনা মহামারীর কারণে গত দুই বছর স্থগিত থাকার পর এবারও ঈদুল আযহায় কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। শোলাকিয়া মাঠে ঈদের প্রথম জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হয়।
অন্যদিকে, পবিত্র ঈদুল আযহা নির্বিঘ্নে উদযাপন নিশ্চিত করতে রাজধানীতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
শনিবার র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল মো: কামরুল হাসান জানান, ঈদের দিন রাজধানীতে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘যদিও আমাদের কাছে ঈদ উপলক্ষে সম্ভাব্য কোনো সন্ত্রাসী হামলার সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্য নেই, তবুও আমরা কোনো ছাড় নিচ্ছি না।’
শানবার বেলা ১১টা থেকে পশুহাটের বর্জ্য অপসারণ শুরু করার প্রস্তুতি নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং রোববার দুপুর ২টা থেকে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ শুরু হবে। এ কাজে মোট ৯ হাজার ৫০ জন শ্রমিক নিয়োজিত থাকবে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এদিকে ঈদের দ্বিতীয় দিনের মধ্যে কোরবানি সম্পন্নের আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
তিনি বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করি যে, অনেকেই ঈদের তৃতীয় দিনে কোরবানির পশু জবাই করে থাকেন। আমরা বিনীতভাবে নিবেদন করছি – তৃতীয় দিনের অপেক্ষায় যাতে কেউ না থাকেন। ঈদের দ্বিতীয় দিনের মধ্যেই যেন সকলেই কোরবানি সম্পন্ন করেন। কারণ বর্জ্য অপসারণে আমরা একটানা দীর্ঘ ৭২ ঘণ্টা কাজ করব। সেজন্য তাদেরও বিশ্রাম প্রয়োজন রয়েছে, ঈদের ছুটির প্রয়োজন রয়েছে।’
সূত্র : ইউএনবি